মক্সিফ্লক্সাসিন, অ্যাজিথ্রোমাইসিন অ্যান্টিবায়োটিকগুলো করোনার সময়ে খুবই বিখ্যাত হয়ে উঠল। করোনা ভাইরাসকে এসব অ্যান্টিবায়োটিকগুলো ধ্বংস করতে পারে না। তবে , ভাইরাস আক্রান্ত শরীরের দুর্বলতা অন্য যেসব শ্বাসতন্ত্রের ব্যাক্টেরিয়া আক্রমণ করতে পারে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ব্যবহার হত মক্সিফ্লক্সাসিন , অ্যাজিথ্রোমাইসিন।
এই লেখায় আমরা এই অ্যান্টিবায়োটিক গুলোর ব্যবহার ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সমন্ধে জানার চেষ্টা করছি।
অ্যামোক্সিসিলিন, সেফট্রিঅ্যাক্সন অ্যান্টিবায়োটিকগুলো সমন্ধে জানতে পড়ুন
অ্যাজিথ্রোমাইসিন, এরিথ্রোমাইসিন , ক্লিন্ডামাইসিন : ম্যাক্রোলিড এবং লিনকোস্যামাইড অ্যান্টিবায়োটিক
- এরিথ্রোমাইসিন, ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন এবং অ্যাজিথ্রোমাইসিন এই অ্যান্টিবায়োটিক গুলো ম্যাক্রোলিডস। ক্লিন্ডামাইসিন অ্যান্টিবায়োটিকটি লিনকোস্যামাইড। এরা ব্যাক্টেরিওস্ট্যাটিক এজেন্ট। অর্থাৎ, ব্যাক্টেরিয়ার সর্বপ্রকার বৃদ্ধিকে প্রতিহত করে এই অ্যান্টিবায়োটিক গুলো।
- ম্যাক্রোলিডস এবং লিনকোস্যামাইড দুটোই ব্যাক্টেরিয়ার রাইবোসোমের একই উপাদানের সাথে যুক্ত হয়। তাই অ্যান্টিবায়োটিক দুটিকে একসাথে প্রয়োগ করা হয় না। অর্থাৎ অ্যাজিথ্রোমাইসিন এবং ক্লিন্ডমাইসিন একসাথে ব্যবহার করার মানে নেই।
- লিজিওনেলা, মাইকোপ্লাজমা, ক্ল্যামাইডিয়া এবং বর্ডেটেলা সংক্রমণের বিরুদ্ধে ম্যাক্রোলিডস ব্যবহার করা হয়।
- ‘জেনিটোইউরিনারি ক্ল্যামাইডিয়া’ বা ‘মাইকোপ্লাজমা’ সংক্রমণের চিকিৎসায় একটি মাত্র ডোজ বা শর্ট কোর্সে অ্যাজিথ্রোমাইসিন ব্যবহার করা হয়।
- ত্বকের সংক্রমণ, সফট টিস্যু ( পেশী, টেন্ডন, নার্ভ, রক্তনালী ইত্যাদি), অস্থিসন্ধির সংক্রমণে ক্লিন্ডামাইসিন দেয়া হয়।
বিভিন্ন এন্টিফাঙ্গাল অ্যান্টিবায়োটিকগুলো সমন্ধে জানুন
অ্যাজিথ্রোমাইসিন কিভাবে কাজ করে ? অ্যাজিথ্রোমাইসিনের ডোজ
ম্যক্রোলিডস এবং লিনকোস্যামাইড ড্রাগগুলোর ফার্মাকোকাইনেটিক্স :
ম্যাক্রোলিডস
- শরীরে অ্যান্টোবায়োটিক গুলো বিভিন্ন মাত্রায় বন্টন হয়। অর্থাৎ ‘বায়োএভেইলিবিলিটি’র তারতম্য হয়। আন্তঃশিরা এবং মুখের খাওয়ার ঔষধ দুই ভাবেই ম্যাক্রোলিডস দেয়া যায়।
- কয়বার দেয়া যায় :
- এরিথ্রোমাইসিন দেয়া যায় দিনে চারবার
- ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন দেয়া যায় দিনে দু’ বার
- অ্যাজিথ্রোমাইসিন দেয়া যায় দিনে একবার
- ম্যাক্রোলিডস অ্যান্টোবায়োটিক খুব ভালোভাবে যুক্ত হতে পারে প্রোটিনের সাথে
- বহিঃকোষীয় বন্টনও চমৎকার ম্যাক্রোলিডসের ।
লিনকোস্য়ামাইডস (বা ক্লিন্ডামাইসিন) :
- মুখে গ্রহণ করলে ক্লিন্ডামাইসিনের শোষণ ভালো হয়
- লিনকোস্যামাইড অ্যান্টিবায়োটিকের শোষণের ওপর খাবার কোন প্রভাব ফেলতে পারে না।
- হাড়ে বা অস্থিসন্ধিতে অ্যান্টিবায়োটিকটি ভালোভাবে প্রবেশ করতে পারে। সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুইডে তেমন পারে না।
অ্যাজিথ্রোমাসিন এবং ক্লিন্ডামাইসিন অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া :
- তরুণ রোগীদের ক্ষেত্রে পরিপাকতন্ত্র ঘটিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। তিরিশ শতাংশ ক্ষেত্রে এরিথ্রোমাইসিন এরকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেয়।
- এরিথ্রোমাইসিন এস্টোলেট দিয়ে কোলেস্ট্যাটিক জন্ডিস হতে পারে
- ইসিজি’তে কিউ-টি ইন্টারভালটি প্রলম্বিত হতে পারে, যার ফলাফল ‘টোর্সা ডি পয়েন্টেস”, এটি হৃদযন্ত্র ঘটিত একটি জটিলতা।
- ক্লিন্ডামাইসিন ব্যবহার করলে ক্লস্ট্রিডিয়াম ডিফিসিল দিয়ে সংক্রমণ হতে পারে।
অ্যামাইনোগ্লাইকোসাইড এবং স্পেকটিনোমাইসিন অ্যান্টিবায়োটিক :
- অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড অ্যান্টিবায়োটিক গুলো মূলতঃ গ্রাম-নেগেটিভ ইনফেকশানের বিরুদ্ধে কার্যকর। যেকারণে ইন্ট্রা-অ্যাবডোমিনাল বা পেটের ভেতরকার সংক্রমণগুলো প্রতিরোধে এই অ্যান্টিবায়োটিকগুলো ব্যবহার হয়।
- কিছু কিছু অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড, যেমন এমিকাসিন, এমডিআর-টিবি বা একাধিক ঔষধের বিরুদ্ধে প্রতিরোধে সক্ষম যক্ষার জীবাণুর বিরুদ্ধে, চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহার হয়।
- অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড গুলো, বিটা ল্যাক্টাম অ্যান্টিবায়োটিকের সাথে কাজ করলে, দুটো ড্রাগেরই কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। এজন্য বিভিন্ন বায়োফিল্ম ইনফেকশানে (জড় বস্তুর ওপর জীবাণুর বসবাস থেকে সংক্রমণ) এই দুটো গ্রুপের অ্যান্টিবায়োটিককে একসাথে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে ইনফেকটিভ এন্ডোকার্ডাইটিস এবং অর্থোপেডিক ইমপ্ল্যান্ট থেকে উদ্ভুত ইনফেকশানও রয়েছে।
- অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড শরীরের যে জায়গায় ইঞ্জেকশান হিসেবে দেয়া হয় সেখানে তেমন লক্ষনীয় অ্যালার্জি বা অন্য সমস্যা সাধারণতঃ হয় না।
- অটোটক্সিটি বা রোগীর কানে শুনতে বা ভারসাম্যের কোন সমস্যা , অথবা নেফ্রোটক্সিসিটি বা কিডনীর সমস্যা, এড়ানোর জন্য রেনাল ফাংশানের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সেই সাথে অ্যান্টিবায়োটিকটি একটানা বেশীদিন ব্যবহার করা যাবে না।
- অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড গুলো ইনঅকুলাম ইফেক্টের সম্মুখীন হয় না, এবং প্রতিটি অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার শেষ হওয়ার পরও বেশ কিছুদিন প্রভাব বজায় রাখে।
কিভাবে মানবশরীরে কাজ করে অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড :
- অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড অ্যান্টিবায়োটিকগুলো খুব একটা ভাল শোষণ হয় না মুখে খেলে
- পানির প্রতি এই অ্যান্টিবায়োটিক গুলোর প্রবণতা আছে। অর্থাৎ হাইড্রোফিলিক। যেকারণে দেহ গহ্বরের বহিঃকোষীয় তরল এবং সেরোসাল ফ্লুইডগুলোতে খুব ভালভাবে মিশে যেতে পারে অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড।
- অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড অন্তঃকোষীয় প্রবেশ করতে পারে না। তবে ককলিয়ার (কানের ভেতরকার) চুল ও রেনাল- কর্টিকাল সেলে ঢুকতে পারবে।
- সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড এবং কর্ণিয়ার প্রবেশ করতে পারে না এই অ্যামিনোগ্লাইকোসাইড। যেকারণে নিউরোসার্জিকাল ইনফেকশানের ক্ষেত্রে, ইন্ট্রাথিকাল এডমিনস্ট্রেশান ( মেরুদন্ডে ইনজেকশান দেয়া) প্রয়োজন হতে পারে।
- অ্যান্টিবায়োটিক শিরাপথে প্রদানের তিরিশ মিনিটের ভেতরে রক্তরসে সর্বোচ্চ পরিমাণ অর্জন করতে পারে।
- থেরাপিউটিক লেভেল বা চিকিৎসার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ড্রাগ রোগীর শরীরে বিরাজ করছে কি না সেটি নিয়মিত লক্ষ্য রাখতে হবে।
জেনটামাইসিন এর ডোজ কিভাবে নির্ধারণ করা হয় : জেনটমাইসিন ব্যবহারের নিয়ম
- এন্ডোকার্ডাইটিসের (হৃদপিন্ডের কলার প্রদাহ) কয়েকটি ক্ষেত্রে, গর্ভবতী অবস্থা, গুরুতর পোড়ার ক্ষত, এন্ড-স্টেজ রেনাল ডিজিজ ( কিডনী জটিলতার অন্তিম পর্যায়) এবং শিশু রোগী ব্যাতীত অন্য সব ক্ষেত্রে প্রতি কেজিতে ৭ মিলিগ্রাম হিসেবে জেনটামাইসিন প্রয়োগ করা হয়। সুতরাং সত্তর কেজির একজন রোগী পাঁচশ মিগ্রার মত জেনটামাইসিন পেতে পারে।
- কতক্ষণ পর পর ডোজ দেয়া হবে, সেটি ড্রাগ ক্লিয়ারেন্স বা কিডনী কি হারে ড্রাগটিকে শরীর থেকে বের করে দিচ্ছে তার ওপর নির্ভর করা হয়। এজন্য হার্টফোর্ড মনোগ্রামের সাহায্য নেয়া হয়।
- স্ট্রেপটোকক্কাল আর এন্টারোকক্কাল এন্ডোকার্ডাইটিসের ক্ষেত্রে, জেনটামাইসিনের সাথে এমন আরো একটি অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয় (সাধারণতঃ বিটা-ল্যাক্টাম) যেটি এই জীবাণু দুটির কোষ প্রাচীরের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে। এতে করে কম ডোজেও দুটো ওষুধের কার্যকারিতা একসাথে বেড়ে যায়।
- এন্টারোকক্কাল এন্ডোকার্ডাইটিসের ক্ষেত্রে রোগীর শরীরের প্রতি কেজি ওজনের বিপরীতে ১ মিগ্রা জেনটামাইসিন ব্যবহার করা হয় - দিনে ২ থেকে ৩ বার।
- স্ট্রেপটোকক্কাস ঘটিত এন্ডোকার্ডাইটিস এর ক্ষেত্রে শরীরের প্রতি কেজি ওজনের বিপরীতে ৩ মিগ্রা জেনটামাইসিন ব্যবহার করা হয় - দিনে ১ বার।
- এন্ডোকার্ডাইটিসের চিকিৎসার ক্ষেত্রে, জেনটামাইসিন ব্যবহারের পূ্র্বে প্রতি লিটার রক্তে অ্যান্টিবায়োটিকের পরিমাণ হবে ১ মিগ্রার কম। জেনটামাইসিন ব্যবহারের পরে প্রতি লিটার রক্তে অ্যান্টিবায়োটিকটির পরিমান হবে ৩-৫ মিগ্রা। যখন জেনটামাইসিন দিনে তিন বার ব্যবহার করা হবে, তখন এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার চেষ্টা করা হয়।
- জেনটামাইসিনের ডোজের ক্ষেত্রে যখন হার্টফোর্ড রেজিমেন অনুসরণ করা হয় না, বা চিকিৎসাটি এন্ডোকার্ডাইটিসের জন্য দেয়া হয় না, তখন দিনে দুই বা তিনবার প্রতি কেজি ওজনের জন্য দৈনিক ৩-৫ মিগ্রা ডোজে ঔষধটি দেয়া হয়। এখানে, জেনটামাইসিন প্রয়োগের পূর্বে রক্তে অ্যানটিবায়োটিকটির পরিমাণ থাকবে প্রতি লিটার এক মিগ্রার কম। এবং অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের পরে মাত্রাটি হবে প্রতি লিটারে ৫-১০ মিলিগ্রাম (কম সংবেদনশীল জীবসত্তাদের ক্ষেত্রে ৭-১০ মিগ্রা প্রতি লিটারে। যেমন : সিউডোমোনাস অরিগুনোসা)
- অন্যান্য অ্যামাইনোগ্লাইকোসাইডের ক্ষেত্রে স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
দেখুন সিউডোমোনাস দিয়ে কি কি রোগ হয়
জেনটামাইসিনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া :
- রেনাল টক্সিসিটি। বা কিডনীর জটিলতা। এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যায়। কিডনীতে বিষক্রিয়া ঘটায় এমন অন্য এজেন্টের ব্যবহারে এই জটিলতা আরও বৃদ্ধি পায়।
- ককলিয়ার টক্সিসিটি। কানের ভেতরে বিষক্রিয়া। এই সমস্যাটি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয় না। সাধারণতঃ বৃদ্ধ রোগীদের ক্ষেত্রে বেশী দেখা যায়। তাছাড়া যাদের মাইটোকোন্ড্রিয়াল জিনে মিউটেশান থাকে, তাদের ক্ষেত্রেও জেনটামাইসিন থেকে কানের সমস্যা হতে পারে।
- শিরাপথে বেশী দ্রুত ড্রাগটি দিলে, নিউরোমাস্কুলার ব্লকেড বা স্নায়ু ও পেশীতন্ত্রের অসাড়তা দেখা দেয়। (ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার, মায়েসথেনিয়া গ্রেভিস এবং হাইপোম্যাগনেসেমিয়া থাকলে এই সমস্যা আরও বেড়ে যায়)।
স্পেকটিনোমাইসিন :
স্পেকটিনোমাইসিন রাসায়নিক গঠনের দিক থেকে অ্যামিনোগ্লাইকোসাইডের মতই। পেশীতে দেয়া হয় এই অ্যান্টিবায়োটিকের ইঞ্জেকশান।
বিটা-ল্যাক্টাম অ্যান্টিবায়োটিককে প্রতিরোধে সক্ষম, এমন নিসেরিয়া গনোরিয়াকে চিকিৎসা করার জন্য স্পেকটিনোমাইসিন তৈরী করা হয়েছিল।
সমস্যা হচ্ছে স্পেকটিনোমাইসিনের প্রতিও প্রতিরোধে সক্ষম জীবাণুর সংখ্যা কম নয়।
স্পেকটিনোমাইসিন একমাত্র গর্ভাবস্থায় “গনোকক্কাল ইউরেথ্রাইটিস”এর চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। অথবা যেসব রোগী বিটা-ল্যাক্টাম অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতি এলার্জিক।
মক্সিফ্লক্সাসিন অ্যান্টিবায়োটিক : কুইনোলোন এবং ফ্লুরোকুইনোলোন
- কুইনোলোন এবং ফ্লুরোকুইনোলোন (মক্সিফ্লক্সাসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন) এগুলো ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী এজেন্ট। সাধারণতঃ এসব ড্রাগের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়া কম দেখায় মানুষের শরীরে।
- কুইনোলোন গুলো শুধুমাত্র গ্রাম-নেগেটিভ ব্যাক্টেরিয়াদের হত্যা করে থাকে। অন্য দিকে ফ্লুরোকুইনোলোন গুলো গ্রাম-পজিটিভ ও নেগেটিভ দুই ধরণের ব্যাক্টেরিয়াকেই মারতে পারে।
- সিপ্রোফ্লক্সাসিনেরও সিউডোমোনাস বিরোধী কার্যক্রম রয়েছে, কিন্তু দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সক্ষমতা বা রেজিস্ট্যান্স তৈরী হয়ে যায় সিউডোমোনাসের।
- কুইনোলোন্স এবং ফ্লুরোকুনোলোন্স গুলো বেশ অনেকগুলি সাধারণ ইনফেকশানের বিরুদ্ধে ব্যবহার হয়। তার মধ্যে আছে মূত্রনালীর রোগ ( ইউরিনারি ট্র্য়াক্ট ইনফেকশান), নিউমোনিয়া এবং একাধিক ড্রাগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধে সক্ষম টিউবারকুলোসিস।
মক্সিফ্লক্সাসিন, সিপ্রোফ্লক্সাসিন কিভাবে কাজ করে শরীরে ?
- মুখে খেলে এই ঔষধগুলোর শোষণ ভালো হয়। কিন্তু খাবার, এন্টাসিড, ফেরাস সালফেট এবং মাল্টিভিটামিন সাথে গ্রহণ করলে শোষণ হতে দেরী হয়।
- বিপুল পরিমাণে বন্টন হতে পারে শরীর জুড়ে এই অ্যান্টিবায়োটিকগুলো। টিস্যুতে অ্যান্টিবায়োটিকটির ঘনত্বের মাত্রা রক্তরসের তুলনায় দ্বিগুণ।
- আন্তঃকোষীয় প্রবেশ ভালো ভাবে করতে পারে এই অ্যান্টিবায়োটিক গুলো। ফ্যাগোসাইটিক কোষগুলোর ভেতর গিয়ে জমা হয়।
মক্সিব্যাক ট্যাবলেট সমব্ধে জানুন
মক্সিফ্লক্সাসিন এর পার্শপ্রতিক্রিয়া :
- পরিপাকতন্ত্র সম্পর্কিত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় ১-৫ শতাংশ ক্ষেত্রে
- বিরল ক্ষেত্রে ত্বকে প্রতিক্রিয়া দেখা যায় (ফটোটক্সিসিটি)।
- ফ্লুরোকুইনোল, কুইনোলোন ব্যবহারে টেনডনের প্রদাহ দেখা দিতে পারে। আকিলিস টেনডন ( পায়ের একটি টেনডন) ছিড়েও যেতে পারে। বিশেষ করে বৃদ্ধ রোগীদের ক্ষেত্রে এমনটা ঘটে থাকে।
- বৃদ্ধ রোগীদের স্নায়ুতন্ত্রের ওপর প্রভাব ফেলে। ডেলিরিয়াম (মানসিক বিভ্রান্তি), ট্রেমর (হাত কাঁপা) , ডিজিনেস (ঝিমুনী), মাঝে মাঝে খিচুনী , ৫ থেকে ১২ শতাংশ ক্ষেত্রে। এমনটাও সাধারণতঃ বৃদ্ধ বয়সী রোগীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়
- শরীর থেকে জ্যানথিন এবং থিওফাইলিনের নিষ্কাশন হতে দেয় না ঠিকমত। এর ফলে অনিদ্রা এবং খিচুনীর সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
- ইসিজিতে কিউ-টি ইন্টারভাল দীর্ঘায়িত হয়। কার্ডিয়াক অ্যারিদমিয়া বা অনিয়মিত হৃদস্পন্দন থাকে।
- মেথিসিলিন রেজিস্ট্যান্ট স্ট্যাপিলোকক্কাস অরিয়াস এবং সি-ডিফিসিল রোবোটাইপ ০২৭ এর আগমনের পেছনে সিপ্রোফ্লক্সাসিন ব্যবহার দায়ী।
অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক হোন। না বুঝে কোন ড্রাগ ব্যবহার করবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া যেকোন অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার বিপদ ডেকে আনতে পারে।

কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন